No Result
View All Result
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
No Result
View All Result
অভিমত
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ নির্বাচিত

অর্থপাচার ও হুন্ডির আন্তঃসম্পর্ক

মো. সহিদুল ইসলাম সুমন

২৫ অক্টোবর ২০২৩

হুন্ডি (Hundi) হলো একটি নীতি-বহির্ভূত ও বেআইনি অর্থ হস্তান্তর ব্যবস্থা। ‘হুন্ডি’ (Hundi) শব্দটি সংস্কৃত শব্দ ‘হুন্ড’ (Hund) থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো ‘সংগ্রহ করা’। এটি বাণিজ্যিক আদান-প্রদান বা ঋণ সংশ্লিষ্ট লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত লিখিত এবং শর্তহীন দলিল, যার মাধ্যমে এক ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে নির্দেশিত পরিমাণ টাকা লেনদেন হয়। এটি Bill of Exchange বা বিনিময় বিল নামেও পরিচিত। আগে হুন্ডি বাণিজ্যিক লেনদেন এবং ঋণ আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। এখনও তা হয়ে থাকে, তবে এটি সাধারণভাবে অবৈধ উদ্দেশ্যে হয়। এই ব্যবস্থা মুগল আমলে পরিচিত লাভ করলেও ব্রিটিশ আমলে জনপ্রিয়তা পায়। বলা যায়, হুন্ডির প্রসার এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই, যা কখনোই বন্ধ থাকেনি।
হুন্ডি এখন অনেক বেড়েছে। অর্থপাচার বেড়েছে বলেই হুন্ডির চাহিদাও এখন অনেক বেশি। খোলাবাজারে ডলারের দর এখন বেশি বলেই যে কেবল প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স হুন্ডির মাধ্যমে আসছে, তা নয়। বরং বলা যায়, অর্থপাচার বাড়ছে বলেই হুন্ডিও বেড়েছে। যারা ধনী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, তারা অর্থপাচার করে মূলত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে। আর যারা ঘুষ-দুর্নীতি, কর ফাঁকি, চোরাচালান বা অন্য কোনো উপায়ে অর্থ উপার্জন করেছেন, তারা অর্থপাচারের জন্য বেছে নেন হুন্ডিকেই।
বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক এই অপরাধমূলক কার্যক্রম। পণ্য বাণিজ্য, রেমিট্যান্স, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থপাচার, স্বর্ণ-মাদকসহ অন্যান্য দ্রব্য চোরাচালান ও মানব পাচারের মতো অপরাধমূলক কার্যক্রমে হুন্ডি-হাওয়ালার ব্যবহার বৃহৎ রূপ ধারণ করেছে। এর মূল কারণই অর্থপাচার। অত্যন্ত রক্ষণশীলভাবে হিসাব করে দেখা গেছে, দেশে হুন্ডি-হাওয়ালার বাজার এখন ৩০-৩৫ বিলিয়ন (৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি) ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আরো গভীর ও গবেষণাভিত্তিক অনুসন্ধান চালালে দেখা যাবে দেশে হুন্ডি-হাওয়ালার বাজারের আকৃতি হয়তো এর চেয়েও অনেক বড়।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, হুন্ডি কেন এতো জনপ্রিয়? প্রবাসীরা ডলারের বেশি দর পেতে, ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে দেশে অর্থ পাঠাতে চায় বলে হুন্ডি বাড়ছে? নাকি দেশের মধ্যে অনানুষ্ঠানিকভাবে ডলার কেনাবেচার প্রয়োজন পড়ছে?
এখানে মূল বিষয় হচ্ছে চাহিদা। চাহিদা বেশি বলেই হুন্ডি বাড়ছে। যারা ভিন্ন পথে অর্থ লেনদেন করবেন, তাদের কাছে ডলারের হার কত, সেটা বিষয় নয়। চাহিদা অনুযায়ী হুন্ডিওয়ালারা ডলারের হার নির্ধারণ করে থাকেন।
যেমন- রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বাড়াতে ডলারের বিনিময় হার হুন্ডির পর্যায়ে নিয়ে গেলেও লাভ হবে না। কারণ ডলারের দর অর্থপাচারকারীদের জন্য কোনো বিষয় নয়। যারা হুন্ডি করে টাকা পাচার করে, তাদের ব্যাংক ১৩০ টাকা দিলে হুন্ডিওয়ালারা ১৪০ টাকা দেবে। কারণ এখানে টাকা কোনো ব্যাপার নয়। এর সবই কালো টাকা। এই কালোটাকা যারা পাচার করে তারা যে কোনো মূল্যেই সেটা করবে।
মার্কিন নাগরিক ফরেস্ট কুকসন ৯০-এর দশকে বাংলাদেশে এসেছিলেন আর্থিক খাত সংস্কার কর্মসূচির একজন কনসালটেন্ট হিসেবে। তিনি ২০১৮ সালে হুন্ডি নিয়ে বেশ কিছু লেখালেখি করেছিলেন। সেখানে তিনি মোটাদাগে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার পাঁচ ধরনের চাহিদার কথা বলেছিলেন। যেমন- আমদানিতে আন্ডার-ইনভয়েসের বার্ষিক চাহিদা ১০ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার, যা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশে কর্মরত (মূলত বস্ত্র ও পোশাক খাতে) প্রচুর ভারত ও শ্রীলঙ্কান নাগরিক, যারা নিজ নিজ দেশে বছরে ৩-৪ বিলিয়ন ডলার অর্থ পাঠান। বাংলাদেশিদের পুঁজি পাচার হয় বছরে ১ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে (মূলত ভারতে) অর্থ পরিশোধ করা হয় বছরে ১ বিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের ঘাটতি পূরণের জন্য বছরে প্রয়োজন হয় ১-৩ বিলিয়ন ডলার।
সব মিলিয়ে বছরে প্রয়োজন হয় ১৬ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার, যা অবৈধ পথে লেনদেন হয়। আর এ কারণেই এখানে হুন্ডির এত প্রসার।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। মূলত আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের মাধ্যমে মূল্য কমবেশি দেখিয়ে অর্থ পাচারের কাজটি করা হয়। বাণিজ্যের আড়ালে ও অর্থপাচার হচ্ছে ব্যাপক ভাবে। বাণিজ্য-ভিত্তিক মানি লন্ডারিংয়ের মধ্যে প্রধান হচ্ছে- ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং। ওভার ইনভয়েসিং হচ্ছে পণ্যের দাম বেশি দেখানো। অর্থাৎ কোনো একটি পণ্যকে বাজারমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামের ইনভয়েস কিংবা চালানপত্র বানিয়ে অন্য দেশে পণ্য রপ্তানি করা। এতে বিক্রেতা ক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ পান, যা দেশে আর আসে না।
অন্যদিকে আন্ডার ইনভয়েসিং হচ্ছে কম মূল্য দেখানো। এটা মূলত করা হয় শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য। কম মূল্য দেখানো হলেও প্রকৃত মূল্য অবৈধ পথে বা হুন্ডির মাধ্যমে আমদানিকারকের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
তাহলে শুল্ক হার কমানোই কি সমাধান? শিল্পায়নের জন্য মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ন্যূনতম শুল্ক আরোপ করা আছে। এখান থেকে শুল্ক আদায় সামান্য হয় বলে আমদানির সময় খুব একটা খতিয়েও দেখা হয় না। মূলত এটাই হচ্ছে ধনীদের অর্থ পাচারের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি।
ফরেস্ট কুকসন ২০১৮ সালে লিখেছিলেন, ভাড়ায় চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র আমদানিতেই ওভার ইনভয়েসিং পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে শুল্কায়নের ক্ষেত্রে প্রাক্-জাহাজীকরণ পদ্ধতি বাধ্যতামূলক ছিল তিন বছর। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আন্ডার ইনভেয়সের ক্ষেত্রে ফরেস্ট কুকসন আরও বলেছিলেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আন্ডার ইনভয়েসের ঘটনা ঘটে, ভারতের ক্ষেত্রে তা ৪০-৪৫ শতাংশ।
সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশ তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বা মজুত ঠিক রাখতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহারের ওপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই বিধিনিষেধে উল্টো ফল দিয়েছে এবং সংকট আরও বেড়েছে। এতে হুন্ডি বা হাওয়ালার চাহিদা বেড়েছে, প্রবাসী আয় আসা কমেছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমেছে। সরকার যখন বৈদেশিক মুদ্রার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে, তখন হুন্ডির প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যায়। বিশেষ করে আমদানির ঋণপত্র বা এলসি খুলতে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হলে ছোট ছোট আমদানিকারকেরা হুন্ডির ওপরই নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। তখন বেশি দরে ডলার কিনতে হলেও হুন্ডিতে লেনদেন কমবে না। এর ফলে ব্যাংকের তুলনায় খোলা বা সমান্তরাল বাজারে ডলারের দর আরও বেড়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কী পরিমাণ টাকা হুন্ডিতে আসে? বাংলাদেশে প্রবাসী আয় নিয়ে কয়েক বছর আগে একটি গবেষণা করেছিল আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা বা আইএলও। ‘ইন দ্য করিডোর অব রেমিট্যান্স: কস্ট অ্যান্ড ইউজ অব রেমিট্যান্স ইন বাংলাদেশ’ নামের প্রতিবেদনে আইএলও বলেছিল, ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠান ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। এটি প্রবাসীদের পাঠানো মোট অর্থের ৬০-৭০ শতাংশ। অর্থাৎ এর বাইরে আরও ৪৩০ কোটি থেকে ৫৭০ কোটি ডলার এসেছিল অবৈধ পথে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় হুন্ডিতে লেনদেন হয়।
অন্য এক হিসাব অনুযায়ী, দেশে আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্যে হুন্ডি-হাওয়ালার মাধ্যমে লেনদেনকৃত অর্থের পরিমাণ কমপক্ষে ১৫ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্স হিসেবে আসছে আরো ১০ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া দুর্নীতি ও কালোবাজারির মাধ্যমে অবৈধ অর্থপাচার, স্বর্ণ ও অন্যান্য পণ্য চোরাচালান, মানব পাচারের মতো কার্যক্রমে হুন্ডি-হাওয়ালার অবদান ৫ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ সরকার ‘ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ফর প্রিভেন্টিং মানি লন্ডারিং অ্যান্ড কমব্যাটিং ফাইন্যান্সিং অব টেরোরিজম ২০১৯-২১’ শীর্ষক একটি কৌশলপত্র তৈরি করেছে। কৌশলপত্রে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচারের গন্তব্য হিসেবে ১০টি দেশের কথা উল্লেখ করা হয়। এগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশেষ করে দুবাই), মালয়েশিয়া, কেইমান আইল্যান্ড ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস। এসব গন্তব্যে অর্থপাচারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো হুন্ডি-হাওয়ালা। বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী প্রায় সবাই এই সব দেশে অর্থপাচারের সাথে সম্পৃক্ত।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, ‘দেশের হুন্ডি বাজার নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা নেই। এটি নিয়ে বিস্তৃত গবেষণার সুযোগ রয়েছে। গবেষণা থাকলে হুন্ডিসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতির আকার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেত।
বাংলাদেশের মানি লন্ডারিং আইন অনুযায়ী কাগজপত্রহীন লেনদেন দণ্ডনীয় অপরাধ। এ জন্য ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার বিধান আছে। আর প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শাস্তি সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানা ও নিবন্ধন বাতিল। অবশ্য আইন করে বা পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে হুন্ডি কখনোই বন্ধ হবে না।
বিশ্বব্যাংকের দুই অর্থনীতিবিদও লিখেছেন, মুদ্রার অবমূল্যায়ন বা আর্থিক প্রণোদনা প্রবাসী আয়কে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট নয়। বরং দেশীয় মুদ্রা যদি দুর্বল অবস্থায় থাকে অথবা প্রবাসী আয় পাঠাতে আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হয়, তাহলে স্বল্প মেয়াদে প্রবাসীদের কাছে সরকারি হার আকর্ষণীয় হতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে তা কাজে দেবে না। কর্তৃপক্ষ যতক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার প্রাপ্যতা ঠিক রাখতে না পারবে, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ হুন্ডি বাজারে যাবেই। যেমন প্রণোদনা দিয়ে বা টাকার বড় অবমূল্যায়ন করেও বাংলাদেশ প্রবাসী আয়কে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে নিয়ে আসতে পারেনি।
অনেক ব্যাংক কর্মকর্তা মনে করেন, ‘‌প্রতি বছর ২০-২১ বিলিয়ন ডলার দেশ থেকে চলে যায়। সে প্রেক্ষাপটে বললে হুন্ডি-হাওয়ালার বাজার ৩০-৩৫ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। তবে এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। শুধু বাণিজ্যের মাধ্যমে নয়, অন্যান্য পন্থায়ও দেশ থেকে অর্থ যায়। আবার বলা হয় বাংলাদেশে ৩০-৪০ শতাংশ রেমিট্যান্স হুন্ডির মাধ্যমে হয়। হুন্ডির চাহিদা আছে বলেই রেমিট্যান্সে হুন্ডি হয়। আমাদের দেশে রেমিট্যান্সে বিনিময় হারের যে হেরফের হচ্ছে, তা হুন্ডির জন্য হচ্ছে। বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীল রাখতে না পারার বড় কারণ হুন্ডি-হাওয়ালা। আজকে যদি প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত পাওয়া যেত, সমস্যা এত প্রকট হতো না। হুন্ডি-হাওয়ালার বাজার যত ডলারেরই হোক, তা সামষ্টিক অর্থনীতিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। এ সংশ্লিষ্ট আইনের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।’ বিপুলসংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও গত অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ না বাড়ার পেছনে এখন হুন্ডি-হাওয়ালাকেই সবচেয়ে বেশি দায়ী করছেন নীতিনির্ধারক ও ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্টরা।
অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ‘‌হুন্ডি বা হাওয়ালার পরিমাণ যদি আমাদের রিজার্ভের আকারের চেয়ে অনেক বেশি হয়ে যায়, তাহলে করণীয়ও অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। সুশাসনের উন্নতি না হলে দুর্নীতি বাড়ে। আর দুর্নীতিগ্রস্ত পরিস্থিতির যদি উন্নতি না হয়, রাজনৈতিক জবাবদিহিতা যদি না থাকে, তাহলে টাকা কীভাবে থাকবে? যারা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ সম্পদ অর্জন করেছে তারা দেখে টাকাটা কোথায় নিরাপদ। এমন বহু কারণে টাকা চলে যাচ্ছে। এটাকে ঠেকানো অনেক কঠিন।’
তবে এখনই হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার কমাতে পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন- রেগুলার মনিটরিং বাড়ানো, রপ্তানি আয় প্রত্যাবসন ও আমদানিতে এলসি খোলার ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো, যেখানে সন্দেহ হচ্ছে সেখানে তদারকি জোরদার করা এবং রেমিট্যান্সের কোন অ্যাকাউন্টে কত টাকা আসছে সেটাও খোঁজ নেওয়া।
সাধারণত রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হলে অর্থ পাচারের প্রবণতা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলেও অনিশ্চয়তা রয়েছে; জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে পরিস্থিতি যে কোনো সময় অস্থির হতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে। তাই অনেকে আর্থিক নিরাপত্তাহীনতার কথা ভেবেও অর্থপাচারে উৎসাহী হয়। রাজনৈতিক সহিংসতা বাড়লে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী টাকা পাচারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
আসলে সমস্যাটা বেশ জটিল, তবে সমাধানহীন নয়। এ জন্য সবার আগে পুরো আর্থিক খাতকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। তবে সবার আগে দরকার অবৈধ অর্থ আয়ের পথগুলো বন্ধ করা। কালোটাকা সাদা করার সুযোগ এবং অর্থপাচারকে উৎসাহ দেওয়াও বন্ধ করতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সদিচ্ছাই মূল, যা এখন নেই। ফলে সংকটও আপাতত মিটছে না।

স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম গড়ে তুলতে এগিয়ে আসুন।

অভিমতের আপডেট পেতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।

বিষয়: অর্থনৈতিক সংকটঅর্থপাচারআন্ডার ইনভয়েসিংওভার ইনভয়েসিংডলার সংকটপ্রবাসী আয়বাজার সংকটবাংলাদেশ ব্যাংকবিদ্যুৎ কেন্দ্রব্যাংক খাতমো. সহিদুল ইসলাম সুমনরেমিট্যান্সসুশাসনহাওয়ালাহুন্ডি
ShareTweetPinSend

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কলাম

রাষ্ট্র কী চায়

৩ জুলাই ২০২৪
Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi
নির্বাচিত

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

জ্বরের নাম হীরামণ্ডি : তাওয়াইফ বনাম বেগমদের অবাক রূপকথা

৫ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে কেন?

৩০ এপ্রিল ২০২৪
নির্বাচিত

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির একটি কর্মসূচি, ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেজ
নির্বাচিত

বিএনপি কি ব্যর্থ হলো?

২২ জানুয়ারি ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় লেখা

আব্দুর রউফ তালুকদার

গভর্নরের ডি গ্রেড ও বাংলাদেশের অর্থনীতি

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সংকটে অর্থনীতি : নতুন বিনিয়োগে স্থবিরতা

২৮ অক্টোবর ২০২৩
জাতিগত আর্মেনীয়রা নাগার্নো-কারাবাখ  ছাড়ছে, ছবি : রয়টর্স

নাগোর্নো-কারাবাখ, আর্মেনিয়ার স্বার্থ ও রাশিয়ার বাগড়া

৬ অক্টোবর ২০২৩
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার

১৬ আগস্ট ২০২৩

অবিনাশ বাবুর ডিম

১৬ আগস্ট ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
google play

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist