No Result
View All Result
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
No Result
View All Result
অভিমত
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ নির্বাচিত

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে কেন?

মাহবুব মোর্শেদ

৩০ এপ্রিল ২০২৪

টানা দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তৃতীয় দফা সাধারণ নির্বাচনের মুখোমুখি হলো নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার। এই নির্বাচনের আগে ভারতজুড়ে আওয়াজ তোলা হয়েছিল, ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি যে নিশ্চিতভাবে জিতবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশই নেই। বরং প্রশ্ন হলো, বিজেপি কত আসনে জিতবে। দলটি দাবি করছিল, তারা এককভাবে সরকার গঠন করার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। ভারতে সরকার গঠনের জন্য ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৭২টি আসন লাগে। বিজেপির দাবি, তারা এককভাবে ৩৭০ আসন পাবে, জোটগতভাবে ৪০০ আসন পার করে ফেলবে।
খুবই সুকৌশলে তারা এই আওয়াজ ছড়িয়ে দিতে পেরেছে। বাস্তবতা যাই হোক, ভারতের মিডিয়া, আন্তর্জাতিক মিডিয়াসহ নির্বাচনী বিশ্লেষকরা একসুরে বলে গিয়েছেন বিজেপি এবার ভূমিধ্বস বিজয় ও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে।
এখনও এই দাবি বলবৎ আছে। অল্প কিছু ছোট মিডিয়া ও ইউটিউব-নির্ভর স্বাধীন সাংবাদিকরা বলছেন বিজেপি এবার তাদের প্রচারণা অনুসারে প্রত্যাশিত আসন পাবে না। তবে বিজেপি যে হারতে পারে একথা জোর দিয়ে খুব কম মানুষই বলেছেন।
অল্প যারা বলছেন তাদের মধ্যে একজন রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ ড. পারাকালা প্রভাকর। তিনি সরাসরি বিজেপির পরাজয়ের আভাস না দিলেও জয় পেতে হলে বিজেপিকে যে যথেষ্ট কষ্ট করতে হবে সে কথা স্পষ্টভাবে বলেছেন। সঙ্গে একটি কথা জুড়ে দিয়েছেন, এবার বিজেপি জিতলে তা ভারতের জন্য খারাপ ফল বয়ে আনবে।
নির্বাচন শুরু হয়েছে ১৯ এপ্রিল, চলবে ১ জুন পর্যন্ত। সাত দফায় হবে ভোটাভুটি। ফল পাওয়া যাবে ৪ জুন। প্রথম দফা নির্বাচনের পরপরই অবশ্য বিজেপির নির্বাচনী বাগাড়ম্বড়ের বেলুনটি চুপসে গেছে। ভোটভুটি শেষ হওয়ার আগে এক্সিট পোল বা ভোট-উত্তর জরিপের ফল প্রকাশে ভারতের নির্বাচন কমিশনের বারণ আছে। কিন্তু এক্সিট পোলের কার্যক্রম তো চলছেই। পয়লা জুন শেষ দফা ভোটের পর ২ ও ৩ তারিখ এক্সিট পোলের খবর জানা যাবে। কিন্তু প্রথম দফা ভোটের পর বিজেপির কপালে ভাঁজ দেখা গেছে। ভোট পড়ার হার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের অনীহা বিজেপিকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিজেপি সমর্থক-গোষ্ঠী ধরেই নিয়েছে তারা ভোট দিক বা না দিক, বিজেপি তো জিতেই আসবে।
অন্যদিকে বিরোধী সমর্থকরা সক্রিয়ভাবে ভোট কেন্দ্রে যাচ্ছে। দুই দফা ভোটের পর বোঝা যাচ্ছে, মোদী হাওয়া এবার ওঠেনি। ২০১৪ সালে মতো মোদী হাওয়া অবশ্য ২০১৯ সালেও ওঠেনি। কিন্তু তারপরও বিজেপি জিতেছে সেবার। এবার নরেন্দ্র মোদী হাওয়া তো ওঠেইনি বরং অনেক ক্ষেত্রে উল্টো হাওয়া বইছে। নির্বাচনের আগে নানা মামলা ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় জেরবার বিরোধীদের মধ্যে কিছুটা চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে। আর মরিয়া হয়ে বিজেপি নেতারা একেবারে সব রকমের কৌশল, মুখোশ ও আচরণবিধি খুলে ফেলে একেবারে হিংসা ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য। ভারতের ভেতরে ও বাইরে বহু মিডিয়া কংগ্রেসকে জড়িয়ে তার মিথ্যা ও মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছে। ভারতের নাগরিক সমাজ সোচ্চার হয়েছে। বলা হচ্ছে, ভোটের উল্টো হাওয়া দেখে নরেন্দ্র মোদী এবার সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কার্ড খেলতে শুরু করেছেন। তবে সমালোচনার তোয়াক্কা করছেন না মোদী। তিনি পরপর একই বক্তব্য পুনরাবৃত্তি করে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতিটাই সামনে নিয়ে আসছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই সাম্প্রদায়িক কার্ড কি কাজে দেবে?
অনেকেই মনে করেন কাজে দেবে। কেননা, গত দশ বছরে বিজেপি ভারতীয় সমাজের যে রূপান্তর ঘটিয়েছে তা ভয়াবহ রূপ গ্রহণ করেছে। বিজেপি যে শুধু নিজেরাই হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করেছে তা-ই নয়, ভারতের অন্য দলগুলো বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে কমবেশি হিন্দুত্ববাদী কৌশল গ্রহণ করেছে। ভারত জুড়ে এক ধরনের হিন্দুত্ববাদী বিস্ফার ঘটেছে। এই বিস্ফারের পরিণতিতেই নরেন্দ্র মোদী দশ বছর ধরে ভারতের ক্ষমতায়। আগামী এক দফা হিন্দুত্ববাদই তাকে রক্ষা করবে বলে অনেকে মনে করেন।
তবে অনেকেই মনে করেন, এবার হিন্দুত্ব কাজে দেবে না। কেননা ভারতের জনগণ আরও বড় বড় সমস্যায় জর্জরিত। নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতি দমন ও শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার কথা বললেও বাস্তবক্ষেত্রে সাফল্য তো দেখাতেই পারেননি বরং নতুন নতুন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার দলের লোকদের বিরুদ্ধে। শাসন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার দেখা মেলেনি দশ বছরে। শুধু তাই নয়, বড় বড় কর্পোরেটদের স্বার্থরক্ষাই বিজেপি সরকারের কাছে বেশি গুরুত্ব পয়েছে। বড় কর্পোরেটগুলো ফুলেফেঁপে আরও বড় হয়েছে। অন্যদিকে দরিদ্র, নারী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলোর কোনো উন্নতি হয়নি। দ্রব্যমূল্য বেড়েছে হুহু করে। বেকারত্ব বেড়েছে। তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়নি। লোক দেখানো কিছু উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু এগুলো জনগণের জীবনমান উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রাখছে সে প্রশ্ন অনেকেই করছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দরিদ্র কৃষকদের দুরবস্থা, দেনার দায়ে আত্মহত্যার ঘটনা ভারতকে অনেক বারই নাড়িয়ে দিয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লিতে বড় বড় কৃষক আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে। কয়েক দফা দিল্লি মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজেপি সরকার কৃষকদের দাবি-দাওয়া খুব বেশি আমলে নেয়নি। পাঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলন গতি পেয়েছিল এই সময়েই। বিজেপি সে আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করেছে। ফলে, সেখানে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ বিজেপির বিপক্ষে কাজ করবে। অন্যদিকে দিল্লিতে ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতার বড় ঘটনা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, তাকে হয়রানি করার জন্য গ্রেফতার করে জেলে দেওয়া হয়েছে। কেরজিওয়াল বেশ জনপ্রিয় ও জনপ্রিয় গণআন্দোলন থেকে তার উত্থান। তার রাজনীতির মধ্যে হিন্দুত্ববাদী উপাদানও যথেষ্ট। তার গ্রেফতার ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের গ্রেফতার নিয়েও অনেক কথাবার্তা হচ্ছে। এই দুই শীর্ষ নেতার গ্রেফতার ছাড়াও বিরোধী প্রায় সব নেতাকেই চাপে রাখার নীতি নিয়েছিল বিজেপি। অর্থনৈতিকভাবে চাপে ফেলেছে। তারা যাতে মুক্তভাবে চলাফেরা করতে না পারে সে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইন্ডিয়া জোট ভাঙার চেষ্টা করেছে। ওই জোটের নেতাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টাও কম করেনি। অনেকক্ষেত্রে সাফল্যও পেয়েছে।
দেশের দুইপ্রান্ত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার ব্যাপারে বিজেপি সরকার যে ভূমিকা রেখেছে তার তুলনা ভারতের ইতিহাসে নেই বললেই চলে। উত্তর-পশ্চিমে জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখে সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে সেখানে দমন নীতির প্রয়োগ একটি স্থায়ী সমস্যা তৈরি করেছে। অন্যদিকে মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে নতুন যে জাতিগত সংঘাত তৈরি হয়েছে তা বিজেপি সরকারের নীতির কারণেই হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। এনআরসি, নারগিকত্ব আইন ও ভোটের আগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারত জুড়ে অস্থিতিশীলতা ও বিপর্যয় তৈরি করবে এমন মনোভাব জোরদার হচ্ছে। আসামে দ্বিতীয়দফা ভোটের দিন ট্রেনসেবা বন্ধ থাকায় কয়েকটি জেলার বাঙালি মুসলমান ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি। এটা থেকে বিজেপির এ অঞ্চল ঘিরে বিজেপির পরিকল্পনার আঁচ এখনই পাওয়া যাচ্ছে। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীন ও ভারতের পাল্টাপাল্টি সেখানেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছে। বিহারে নীতিশ কুমারকে দলে টেনে সেখানকার পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া গেলেও ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কতটা সুবিধা করতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
দক্ষিণভারতে বিজেপির অবস্থা বরাবরই খারাপ। সেখানে আঞ্চলিক দলগুলো ঐতিহাসিকভাবে শক্তিশালী, দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর স্বাতন্ত্র্যবোধ, শিক্ষার উচ্চহার, হিন্দি বলয়ের প্রতি সমালোচনামূলক মনোভাব, সাংস্কৃতিক ভিন্নতা দক্ষিণে বিজেপিকে খুব একটু সুবিধা করতে দেয়নি। যদিও এবার ভোটের আগে বিজেপি দক্ষিণে যথেষ্ট মনোযোগ দিয়েছে। তারপরও সেখানে দলটি খুব সুবিধা করতে পারবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এতকিছুর পরও হিন্দি বলয়ের বড় অংশটি বিজেপির পকেটেই রয়ে গেছে। রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্রে বিজেপির শক্ত ঘাঁটিতে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা কতটা ভাগ বসাতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কোনো কোনো নির্বাচন বিশ্লেষক অবশ্য মনে করছেন, নিজের ঘাঁটিতে স্থায়ী সমর্থকদের সামনে বিজেপি এবার নতুন কোনো অফার নিয়ে হাজির হতে পারেনি। গত নির্বাচনগুলোতে পুলওয়ামা ও বালাকোট যেভাবে গণজোয়ার তৈরি করেছিল এবার তেমন কিছু বিজেপির হাতে নেই। ভোটারদের উদ্দীপ্ত করার মতো কিছু দিতে পারছে না বিজেপি। তড়িঘড়ি রামমন্দির উদ্বোধন, আম্বানীদের বিয়ে, বিভিন্ন মসজিদ দখল করে মন্দির ভাঙার পরিকল্পনা খুব বেশি উম্মাদনা তৈরি করতে পারেনি।
অঞ্চল-ভিত্তিক হিসাব-নিকাশের বাইরে শ্রেণী-ভিত্তিক হিসাব-নিকাশও আছে। নিম্নবিত্তের মানুষজন বিজেপি শাসনের সুফল পায়নি। তাদের মধ্যে অপ্রাপ্তির বেদনা ও ক্ষোভ আছে। অন্যদিকে হিন্দুত্ব কার্ড ও মুসলিম বিদ্বেষ কাজে লাগিয়ে তাদের ভোট টানাই বিজেপির জন্য সহজ। কিন্তু, নিজেদের জীবনমানের উন্নয়ন না হলে শুধু হিন্দুত্ব তাদের কতটা অনুপ্রাণিত করতে পারবে?
২০১৪ সালে ভারতের মধ্যশ্রেণী অনেকটাই ডিমোটিভেটেড ছিল। কংগ্রেসের পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি নিয়ে তাদের মধ্যে বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছিল। হিন্দুত্ববাদের মধ্য দিয়ে নতুন নেতা হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর উত্থানকে তারা মোটাদাগে স্বাগত জানিয়েছিল। ওই সময় মোদীর বক্তব্য তাদের নতুন ও উন্নত ভারতের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু দশ বছরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। নতুন ভারত হয়নি, সবার উন্নয়ন হয়নি, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়নি। বরং রাষ্ট্রীয় ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর আশঙ্কাজনক দলীয়করণ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিরপেক্ষ আচরণ করতে পারছে না। কর্পোরেট হাউসগুলোর সহায়তায় বিজেপি সরকার গণমাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে, এমবেডেড জার্নালিজমের একটি শক্তিশালী প্রবাহ তৈরি করেছে। মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে ভারতের একসময়ের গর্ব এখন আর নেই। মানবাধিকার পরিস্থিতিও আশঙ্কাজনক। বিজেপির পুরো শাসন আমল জুড়ে মুসলিম-বিদ্বেষী নানা ঘটনা মধ্যশ্রেণীকে অনেকবারই নাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো ভারতের মধ্যশ্রেণীর আকার ছোট নয়, তাদের সচেতনতার স্তরও সংকুচিত নয়। বিজেপির নানা চেষ্টা সত্ত্বেও মধ্যশ্রেণী সেখানে বেশ সক্রিয়। তারা কোনো না কোনোভাবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগে অভ্যস্ত। অনাবাসী ভারতীয়দের একটা গভীর প্রভাব ভারতের শহরাঞ্চল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আছে। নাগরিক সমাজের ভাল রকমের সক্রিয়তাও সেখানে দেখা যায়। ভারতের শিক্ষিত ও অগ্রসর মধ্যশ্রেণী এবং নাগরিক সমাজ একটি ব্যাপার উপলদ্ধি করতে পারছে, নরেন্দ্র মোদী যেভাবে ক্ষমতা কুক্ষীগত করে চলেছেন এবং স্বৈরাচারী ও কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠছেন তাতে এ দফা জিতে এলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এমনকি বিজেপির নীতি ভারতের অখণ্ডতা ও সংহতি রক্ষা করতে পারবে কি না এ নিয়ে কেউ কেউ সন্দিহান। সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র বলে ভারতের গালভরা দাবিও রীতিমতো হুমকির মুখে।
নরেন্দ্র মোদী যে শুধু রাজনৈতিক দল, মিডিয়া, নাগরিক সমাজ, বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদির ওপর খড়গহস্ত হচ্ছেন তাই নয়। নিজের দলের ওপরও তিনি সর্বময় কর্তৃত্ব তৈরি করেছেন। পুরোনো ও প্রভাবশালী নেতাদের পথ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। শক্তিশালী উত্তরসুরি তৈরি হতে দিচ্ছেন না। শুধু তাই নয়, বিজেপির মাতৃসংগঠন আরএসএস-এর ওপরও তিনি একক কর্তৃত্ব তৈরি করেছেন।
নরেন্দ্র মোদীর শাসনের অধীনে ভারতের বর্তমান অবস্থাকে অনেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী জার্মানির সঙ্গে তুলনা করছেন। তারা বলছেন, ভারত একটা জাতিগত নিধন ও সংঘাতের আশঙ্কার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
কিছু নাগরিক আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভারতের ছাত্র ও নাগরিক সমাজের মনোভাব বোঝা গেছে। জওয়াহেরলাল বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয়, আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাবলী এখনও ফিকে হয়ে যায়নি। রাহুল গান্ধীর রোডমার্চ কর্মসূচি- ভারত জোড়ো বেশ প্রভাব তৈরি করতে পেরেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, এর ফল কি এবারের নির্বাচনেই পাওয়া যাবে?
দক্ষিণ এশিয়ার বড় দেশ হিসেবে ভারত এ অঞ্চলের নেতা হিসেবে আবির্ভূত হতে চায়। দেশটির এ আকাঙ্ক্ষা হয়তো ন্যায্যও। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিজেপি সরকারের নীতি পুরো দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মার খেয়েছে। এ অঞ্চলে ভারতের নেতৃত্ব বারবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। পাকিস্তানের কথা নতুনভাবে বলার অপেক্ষা রাখে না। আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ সহ বিভিন্ন দেশে ভারতীয় নীতি যেভাবে মার খাচ্ছে তা দেশের ভেতরে মোদী সরকারের মুখ উজ্জ্বল করছে না। সর্বশেষ মিয়ানমারের রাখাইনে ভারতের কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট প্রজেক্টের পরিস্থিতি বলছে ভারত সেখানেও সুবিধা করতে পারছে না। বাংলাদেশেও ভারতের নীতি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে, তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। ভারতের সচেতন মানুষ বুঝতে পারছে, এই নীতি অনুসরণ করে তারা চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা করতে পারবে না।
সব মিলিয়ে ভারতের ভোটাররা নতুন করে ভাবতে শুরু করতে পারে। তবে ভারতে দুর্বল বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বা বিজেপি হারলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য সেটা সহায়ক হবে এমন মনে করার কিছু নেই। একটি ব্যাপার ঘটতে পারে। ভারতের ভেতর ক্রমবর্ধমান হিন্দুত্ববাদ ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমাদের মধ্যে যে অস্থিতিশীলতা ও আশঙ্কা তৈরি করছে সেটা থেকে অন্তত আমরা রেহাই পেতে পারি।

বিষয়: কংগ্রেসনরেন্দ্র মোদীবিজেপিভারতমাহবুব মোর্শেদরাহুল গান্ধীলোকসভা নির্বাচন
ShareTweetPinSend

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কলাম

রাষ্ট্র কী চায়

৩ জুলাই ২০২৪
Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi
নির্বাচিত

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

জ্বরের নাম হীরামণ্ডি : তাওয়াইফ বনাম বেগমদের অবাক রূপকথা

৫ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির একটি কর্মসূচি, ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেজ
নির্বাচিত

বিএনপি কি ব্যর্থ হলো?

২২ জানুয়ারি ২০২৪
নির্বাচিত

এমেরিকা কি শেষ পর্যন্ত কিছু করবে?

১৫ জানুয়ারি ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় লেখা

কবি ও ভাবুক ফরহাদ মজহার

কেননা আমরা চিনি চিন চিন

১৬ আগস্ট ২০২৩
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস, ছবি : ইউনূস সেন্টার

ড. মুহাম্মদ ইউনূস কেন আলোচনায়?

৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ভারত কি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকে পড়বে?

৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মাছ ধরার নৌকা, ছবি : আই স্টক

ফিশারি খাতের অবনতি

১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন?

৯ নভেম্বর ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
google play

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist