No Result
View All Result
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
No Result
View All Result
অভিমত
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ নির্বাচিত

আফ্রিকায় সামরিক অভ্যুত্থানের নেপথ্যে

আহমেদ বায়েজীদ

১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
গ্যাবনের কু'য়ের পর, ছবি : রয়টর্স

গ্যাবনের কু'য়ের পর, ছবি : রয়টর্স

এক মাসের মাথায় আফ্রিকা মহাদেশের আরো একটি দেশে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করলো সামরিক বাহিনী। এবারের দেশটির নাম গ্যাবন। যথারীতি এটিও আফ্রিকায় ফ্রান্সের প্রভাব বলয়ের একটি দেশ। এক মাস আগে জুলাইয়ের ২৬ তারিখে সাব সাহারা বা সাহেল অঞ্চলের দেশ নাইজারের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ বাজুমকে সরিয়ে ক্ষমতা নিয়েছে সামরিক বাহিনী। আর গ্যাবনের ঘটনা ঘটেছে ৩০ আগস্ট।
ঔপনিবেশিক যুগ শেষেও আফ্রিকার সাবেক উপনিবেশগুলোয় নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে আসছে ফ্রান্স। নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের ক্ষমতায় রেখে খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ দেশগুলোর এসব সম্পদ ইউরোপে নেয়ার জোরালো অভিযোগ আছে; কিন্তু পরপর কয়েকটি দেশে বেসামরিক সরকার হটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকে দেখা হচ্ছে ফ্রান্সের প্রভাব-বিরোধী তৎপরতার উত্থান হিসেবে। নাইজার ও গ্যাবন ছাড়াও গত কয়েক বছরে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে মালি, বুরকিনা ফাসো, চাদ, গিনির মতো দেশে।
যার ফলে অঞ্চলটিতে ফরাসি প্রভাবের শেষ দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। অভ্যুত্থানের পরই অনেক দেশে জনগণকে আনন্দ করতে দেখা গেছে। তারা ফ্রান্স ও পশ্চিমা বিরোধী স্লোগানও দিয়েছে। এসব কি আফ্রিকার নবজাগরণের আভাস?
আফ্রিকা অঞ্চলে রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াগনারের উপস্থিতি আছে। ওয়াগনারের মাধ্যমেই মস্কো সেখানে প্রভাব বিস্তার করছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আবার চীন তাদের ঋণের ভাণ্ডার খুলে বসেছে দেশগুলোর জন্য। তারাও চাইছে আফ্রিকায় পায়ের ছাপ রাখতে। ফলে এইসব ঘটনাপ্রবাহ পশ্চিমাদের সাথে চীন-রাশিয়া বলয়ের প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ের অংশ কিনা সে প্রশ্নও জোরেশোরে উঠছে।
নেপথ্যে যাই থাকুক, অনেকে এসব অভ্যুত্থানকে সরাসরি ফ্রান্সের পরাজয় হিসেবেই আখ্যায়িত করছেন।
আফ্রিকায় ফ্রান্স
‘ফ্রান্স ছাড়া গ্যাবন একটি চালকবিহীন গাড়ি, আর গ্যাবন ছাড়া ফ্রান্স একটি তেলবিহীন গাড়ি’। উক্তিটি করেছিলেন ওমর বঙ্গো অনদিমবা। যিনি ১৯৬৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত একটানা গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরপর তার জায়গায় প্রেসিডেন্ট হয়েছেন তারই ছেলে আলী বঙ্গো অনদিমবা। এই আলী বঙ্গোকেই ৩০ আগস্ট ক্ষমতা থেকে সরিয়ে গৃহবন্দী করে রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী। শেষ হয়েছে বঙ্গো পরিবারের ৫৬ বছরের শাসন।
ওমর বঙ্গোর এই উক্তিটিতে ফ্রান্সের সাথে আফ্রিকা মহাদেশে সাবেক উপনিবেশগুলোর সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ফুটে উঠেছে। গত শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ আফ্রিকার ফরাসি উপনিবেশগুলো স্বাধীনতা পেয়ে যায়; কিন্তু এরপর মহাদেশটি থেকে সরে আসতে চায়নি ফ্রান্সের শাসকরা। এজন্য তারা একটি কৌশল অবলম্বন করে, সেটি হলো- পছন্দের লোকদের ক্ষমতায় রেখে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করা। ভিনদেশের স্বার্থরক্ষা করে ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখা শাসক বিশ্বে যুগে যুগেই ছিলো। আফ্রিকা মহাদেশেও ফ্রান্স এমন একদল অনুগত শাসকগোষ্ঠী তৈরি করেছে।
এর প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয় অঞ্চলটির সমৃদ্ধ খনিজ সম্পদের কথা। স্বর্ণ, ইউরেনিয়াম, হিরা ও তেলের মতো মূল্যবান খনিজ সম্পদ প্রচুর পরিমাণে রয়েছে আফ্রিকায়; কিন্তু প্রযুক্তি ও দক্ষতার অভাবে তারা সেগুলো উত্তোলন ও ব্যবহার করতে পারেনি। সেই সুযোগটি নিয়েছে ফ্রান্সসহ পশ্চিমারা। তারা বিভিন্ন চুক্তির মারপ্যাচে অথবা শাসক গোষ্ঠীকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে- নামমাত্র মূল্যে এসব সম্পদ হাতিয়ে নিয়েছে বছরের পর বছর।
এসব সম্পদের লোভে পশ্চিমা কোম্পানিগুলো দলে দলে সেখানে ভীড় করেছে। এর মধ্যে ফ্রান্সের ওরানো, টোটাল এনার্জি, যুক্তরাষ্ট্রের কনকো ফিলিপস উল্লেখযোগ্য। এভাবেই আফ্রিকার সম্পদ চলে যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকায়- আর আফ্রিকা গরিবই থেকে যাচ্ছে। আধিপত্য ধরে রাখতে এমনকি আফ্রিকায় ফ্রান্স তাদের সাবেক উপনিবেশগুলোর মধ্যে যৌথ মুদ্রাও চালু করেছে। উন্নয়ন বরাদ্দের ঘোষণা দেয়া হয়েছে বছর বছর- যদিও সাধারণ জনগণ দরিদ্রই রয়ে গেছে, যুবকরা রয়ে গেছে বেকার।
গ্যাবনের ইউরেনিয়াম দিয়েই ফ্রান্সের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি হয়েছিলো। যে কারণেই হয়তো বঙ্গো পরিবারের অনেক সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির হাজারো অভিযোগ আছে জেনেও প্যারিস চুপ করে থেকেছে। গণতন্ত্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতায় তারা কীভাবে টিকে ছিলো সেটি নিয়ে ফ্রান্সকে কখনোই কথা বলতে দেখা যায়নি। আবার ফ্রান্সের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বর্তমান চাহিদার ২০ শতাংশ ইউরেনিয়াম আসে নাইজার থেকে। ৪০ বছরেও বেশি সময় ধরে ফরাসি কোম্পানিগুলো নাইজারের খনিজ সম্পদ উত্তোলনের কাজ পাচ্ছে; কিন্তু নাইজার বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর একটিই রয়ে গেছে।
আফ্রিকায় ফরাসি ফুটপ্রিন্টের আরেকটি অজুহাত উগ্রবাদ দমন। ২০১৩ সাল থেকে আফ্রিকায় সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের নামে সেনা পাঠিয়েছে ফ্রান্স। বেশ কয়েকট দেশে আল শাবাব ও বোকো হারামের মতো চরমপন্থী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ঘাঁটি গেড়েছে ফরাসি সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রও একাধিক ড্রোন ঘাঁটি তৈরি করেছে সেখানে।
অঞ্চলটিতে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে ফ্রান্স কতটা মরিয়া সেটি বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর বারবার আফ্রিকা সফর এবং কর্মতৎপরতা দেখলে স্পষ্ট হয়। নাইজার ফরাসি রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করলেও ম্যাখোঁ তাকে দেশে ফিরতে না করে দিয়েছেন। মারাত্মক ঝুঁকি আছে জেনেও তার এই বেপরোয়া আদেশ।
পশ্চিমা বিরোধী সেন্টিমেন্ট
নাইজার ও গ্যাবনে অভ্যুত্থানের পেছনে হয়তো স্থানীয়ভাবে পৃথক পৃথক কারণ রয়েছে, কিন্তু একটি জায়গায় এই দেশ দুটির মিল হলো- দুই দেশেই ফ্রান্সের পৃষ্ঠপোষকতায় টিকে থাকা সরকারকে উৎখাত করা হয়েছে। এর আগে একই ধরনের পরিস্থিতি দেখা গেছে মালি, বুরকিনা ফাসো, গিনি ও চাদে। এ নিয়ে গত তিন বছরের মধ্যে ফ্রান্স আফ্রিকার ছয়টি দেশে নিজেদের মিত্র সরকার হারিয়েছে।
আফ্রিকা অঞ্চলে সামরিক অভ্যুত্থান বলতে গেলে নিয়মিত ঘটনা। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর বেশিরভাগই হয়েছে সাবেক ফরাসি উপনিবেশে। ২০০০ সালের পর থেকে সাবেক ফরাসি উপনিবেশ- এমন দেশগুলোতে ১৬টি সফল অভ্যুত্থান হয়েছে। অভ্যুত্থান চেষ্টা হয়েছে আরো অর্ধ ডজনের বেশি। নাইজারে অভ্যুত্থানের পর দেশটির জনগণ রাস্তায় প্রকাশ্যে ফ্রান্স-বিরোধী স্লোগান দিয়েছে। রাজধানীতে ফরাসি দূতাবাসে হামলা হয়েছে। দেশটির সামরিক জান্তা ফ্রান্সের রাষ্টদূতকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন দেশ ছাড়ার। অভ্যুত্থান ঠেকাতে পশ্চিমা আশীর্বাদপুষ্ট ইকোয়াস জোটকে দিয়ে সামরিক অভিযানের হুমকি দেয়া হয়েছে।
ইকোয়াস হচ্ছে পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট, যার অফিশিয়াল নাম ইকোনমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস। কিন্তু ইকোয়াসের হুমকির বিরুদ্ধে নাইজারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে মালি ও বুরকিনা ফাসো। তারা নাইজারের সামরিক সরকারে পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রয়োজনে সেনা পাঠানোর ঘোষণাও দিয়েছে। নাইজারের সামরিক জান্তাও দুই দেশের সেনাদের প্রবেশের অনুমতি দিয়ে একটি ডিক্রি জারি করেছে।
এর আগে মালি, চাদ, গিনি, বুরকিনা ফাসোতেও ফরাসি-বিরোধী সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে অভ্যুত্থানকারীরা জনগণের সমর্থন পেয়েছে। মালি ও বুরকিনা ফাসো ২০২০ সালে ফ্রান্সের সেনাদের দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতার নামে ফরাসি সেনারা দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রভাব বিস্তার করছে এবং খনি শিল্পে নিজেদের সুবিধা আদায় করছে বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
যার ফলে ফ্রান্স আফ্রিকা অঞ্চলে বড় ধরনের বেকায়দায় পড়ে। আর সর্বশেষ নাইজার ও গ্যাবনের সেনা অভ্যুত্থান তাদের বিপদ আরো বাড়িয়েছে।
বেকায়দায় ফ্রান্স
এমন পরিস্থিতিতে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে ফ্রান্সের বিদায় ঘণ্টা বেজে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। নাইজারে ইকোয়াস জোট সামরিক অভিযানের হুমকি দিয়েও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এর একটি কারণ নাইজারের প্রতিবেশী দুটি দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসো এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার এবং প্রয়োজনে নাইজারের সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নাইজারে ইকোয়াস জোট বাহিনী পাঠালে তা আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে। আর এমন কিছু হলে যে তার দোষ পশ্চিমাদের ঘাড়েই চাপানো হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
নাইজারের সামরিক জান্তা ‘দেশ রক্ষায়’ রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা গ্রুপ ওয়াগনারের সহায়তাও চেয়েছে। এর ফলে বিষয়টি স্পষ্ট যে, রাশিয়াও এই ইস্যুর সাথে জড়িয়ে গেছে। প্রকাশ্যে মস্কো কোনো মন্তব্য না করলেও আফ্রিকায় ওয়াগনারের যে প্রভাব ও নেটওয়ার্ক রয়েছে- তার সাথে ক্রেমলিনের সংযোগ নেই এমন ভাবা ভুল হবে। সুদানেও চলমান সংঘাতে এক পক্ষকে অস্ত্র দিয়ে যাচ্ছে ওয়াগনার। কাজেই নাইজারে যুদ্ধ শুরু হলে সেই যুদ্ধে ওয়াগনারের মাধ্যমে রাশিয়ার জড়িয়ে পড়ার একটি আশঙ্কা থাকে। এছাড়া তুরস্কও নাইজারে সেনা অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
যা পশ্চিমাদের উভয় সঙ্কটে ফেলেছে। তারা না পারছে নাইজারে নিজেদের সমর্থিত প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় বহাল করতে, না পারছে সেনা অভিযান চালাতে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গ্যাবনে ফ্রান্স সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করা হলো। যা আফ্রিকাজুড়ে ফ্রান্সের উপস্থিতির জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।
প্যারিসের জন্য পরিস্থিতি কতটা প্রতিকূল তা বোঝার জন্য একটি উদাহরণ হচ্ছে- গত সোমবার (২৯ আগস্ট) ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নাইজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার জন্য দোষারোপ করেছেন আমেরিকা ও ইউরোপীয় মিত্রদের।
যে কথা কেউ বলছে না
গত মাসে ফ্রান্সের পার্লামেন্টের একদল ডানপন্থী এমপি প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, গতকালকের ফ্রাঙ্কাফেরিক এর জায়গা আজ দখল করে নিয়েছে ‘সামরিক রাশাফেরিক’, ‘অর্থনৈতিক চায়নাফেরিক’ কিংবা ‘কূটনৈতিক আমেরিকাফেরিক’।
ফ্রাঙ্কাফেরিক কূটনীতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি টার্ম। আফ্রিকা বিশেষ করে সাহেল অঞ্চলের দেশগুলোতে ফ্রান্সের প্রভাব বোঝাতে এই টার্মটি প্রথম ব্যবহার করেছিলেন আইভরি কোস্টের প্রথম প্রেসিডেন্ট ফেলিক্স-হাইফোত বোগনি। নাইজারে অভ্যুত্থানের পরই ফ্রাঙ্কাফেরিকের দিন শেষ হয়ে এসেছে বলে ফরাসির পার্লামেন্টের এমপিদের ওই গ্রুপটি শঙ্কা প্রকাশ করে। এর জায়গায় তারা রাশিয়ার সামরিক, চীনের অর্থনৈতিক ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রভাব জোরদার হচ্ছে বলে ধারণা করে। চিঠিতে আরো বলা হয়, বন্ধুত্বপূর্ণ আফ্রিকা মহাদেশের মনোভাব ফ্রান্স আর বুঝতে পারছে না এবং সেখানে ফ্রান্সের উপস্থিতি ও প্রভাব ক্রমশ বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে।
আফ্রিকায় গত কয়েক বছরে যা ঘটেছে তার পেছনে রাশিয়া ও চীনের হাত রয়েছে কিনা সে কথা অবশ্য পশ্চিমা রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জোর দিয়ে বলছেন না। তবে চীন দেশের বাইরে তাদের প্রথম সামরিক ঘঁটি গড়েছে পূর্ব আফ্রিকার জিবুতিতে। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলোর জন্য তারা প্রচুর ঋণ বরাদ্দ করছে। গত কয়েক বছরে গ্যাবনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠেছে চীন। রাশিয়ার হয়ে ওয়াগনার গ্রুপ সেখানে বিশাল নেটওয়ার্ক ও সামরিক উপস্থিতি জোরদার করেছে। নাইজারের সামকির জান্তা তো সরাসরি ওয়াগনারের সহায়তাই চেয়েছে।
যার ফলে আফ্রিকায় ফ্রান্সসহ পশ্চিমাদের উপস্থিতিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে যে মস্কো ও বেইজিংয়ের ভুমিকা নেই সে কথা বলা যাবে না। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ একটি কথা জোর দিয়ে বলছেন- ‘এক মেরুর বিশ্বব্যবস্থার ইতি ঘটতে চলেছে।’ অর্থাৎ বিশ্ব এখন পশ্চিমাদের একক প্রভাব থেকে বের হয়ে যাচ্ছে- এটাই বোঝাতে চেয়েছেন ল্যাভরভ। গত কিছুদিনে বিশ্বব্যবস্থা মোটাদাগে দুই ভাগে ভাগ হওয়ার মতো কিছু লক্ষণও দেখা যাচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে চীন-রাশিয়ার সম্পর্ক বৃদ্ধি ইতোমধ্যে তার আভাস দিয়েছে। সেখানে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে মিত্রতার সম্পর্ক ফিরিয়ে এনে সবচেয়ে বড় ব্রেক থ্রু দিয়েছে চীন। সংযুক্ত আরব আমিরাতও সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকছে। তাহলে কী আফ্রিকাতেও একই ধরনের পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে? দ্বি-মেরু বা বহুমেরুর যে বিশ্বব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে, সেটাই কি আফ্রিকায় নতুন স্নায়ুযুদ্ধের কারণ?
এরচেয়েও ভয়াবহ একটি কথা বলেছেন আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক মিখায়েল শুরকিন। তার মতে, আফ্রিকায় ফ্রান্স-বিদ্বেষী মনোভাব ভালো নাকি মন্দ সেটা ভিন্ন বিষয়; কিন্তু আফ্রিকার সরকারগুলোর জন্য এখন ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক রাখা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুরকিনের এই উক্তির ব্যাখা হিসেবে ধরে নেয়া যায় যে, আফ্রিকার সরকারগুলো এখন ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে। কারণ প্যারিসপ্রীতি তাদের যে কোনো সময় উৎখাতের আশঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য বেসামরিক সরকারগুলো এখন ফ্রান্স ইস্যুতে খুব সাবধানে পা ফেলতে বাধ্য হবে। যা পশ্চিমাদের বা ফ্রান্সের জন্য মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিষয়: আফ্রিকাআহমেদ বায়েজীদওয়াগনারচীনফ্রান্সরাশিয়াসামরিক অভ্যুত্থান
ShareTweetPinSend

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কলাম

রাষ্ট্র কী চায়

৩ জুলাই ২০২৪
Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi
নির্বাচিত

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

জ্বরের নাম হীরামণ্ডি : তাওয়াইফ বনাম বেগমদের অবাক রূপকথা

৫ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে কেন?

৩০ এপ্রিল ২০২৪
নির্বাচিত

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির একটি কর্মসূচি, ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেজ
নির্বাচিত

বিএনপি কি ব্যর্থ হলো?

২২ জানুয়ারি ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় লেখা

মূল্যস্ফীতি থেকে মুক্তি কীভাবে?

১ অক্টোবর ২০২৩

কমছে রেমিট্যান্স, বাড়ছে অর্থপাচার

৯ অক্টোবর ২০২৩

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
গ্রেফতারের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

রাজনৈতিক সংকটে মির্জা ফখরুলের জামিনের গুরুত্ব

২০ নভেম্বর ২০২৩
তোফায়েল আহমেদ

২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করা শেষ ব্যক্তি ছিলাম আমরা দু’জন

১৭ আগস্ট ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
google play

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist