No Result
View All Result
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
No Result
View All Result
অভিমত
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ নির্বাচিত

সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেট নেই

মো. সেলিম

৩১ আগস্ট ২০২৩

বাংলাদেশের বাজারে সিন্ডিকেট আছে না নেই, তা নিয়ে দ্বিধা তৈরি হয়েছে। খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী সেই দ্বিধা তৈরি করেছেন। গত ২৬ জুন জাতীয় সংসদে তোপের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ‘বাজারে সিন্ডিকেটের কথা বলা হয়। এটা ঠিক যে বড় বড় গ্রুপগুলো একসাথে অনেক বেশি ব্যবসা করে। আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার- আমরা জেলে ভরলাম, জরিমানা করলাম। সেটা হয়ত করা সম্ভব। কিন্তু তাতে হঠাৎ করে ক্রাইসিসটা তৈরি হবে, সেটা সইতে তো আমাদের কষ্ট হবে। এজন্য আমরা আলোচনার মাধ্যমে নিয়মের মধ্যে থেকে চেষ্টা করি।’ (বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম)
তবে বুধবার (২৭ আগস্ট) তিনি তার বক্তব্য ঘুরিয়ে নেন।
তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট আছে বা সিন্ডিকেট ভাঙবো, এই ধরনের কোনো কথা আমি বলিনি। আমি বলেছি যে মাঝে মধ্যে বাজারে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী? আমরা ভোক্তা অধিকার দিয়ে চেষ্টা করি যেন ন্যায্য দামে বিক্রি হয়। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের লোকবল কম হওয়ার কারণে কিছুটা শ্লথ হয়… এ কথাটাই বলেছি। আমি জানি না কালকে প্রশ্ন কী ছিল, আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কী মিন করে বলেছেন’। (বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম)
বাণিজ্যমন্ত্রী তার ভাষ্যে পরিবর্তন আনার আগের দিন মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব।’
প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্যের কারণ যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম। তিনি ওই সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করেন, সারা বিশ্বেই অর্থনৈতিক ধকল যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে লক্ষ্য করছি, নিত্যপণ্যের ব্যাপারে মৌসুমী ব্যবসা পরিচালিত হয়। মজুত আছে, সরবরাহ আছে, তারপরেও হঠাৎ করে জিনিসের দাম বেড়ে যায়। পেঁয়াজ, ডাবের ক্ষেত্রে দেখলাম। কাঁচামরিচের কেজি ১ হাজার টাকা দেখলাম। অনেক পণ্যের ব্যাপারে সিন্ডিকেট করে বাংলাদেশে ব্যবসা করে মানুষের পকেট থেকে অনেক টাকা নেওয়া হচ্ছে।
সাইফুল আলম তার প্রশ্নে বলেন, সিন্ডিকেটের কথা দায়িত্বশীল মন্ত্রীরাও বলেন। তারা বলেন, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যায় না। সেখানে হাত দিতে গেলে বিপদ আছে। আমরা মনে করি, সরকার অত্যন্ত শক্তিশালী। সরকার দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে। এই নিত্যপণ্যের মৌসুমী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে কী না তা জানতে চান তিনি।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিপদ আছে কে বলেছে, আমি ঠিক জানি না। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।’

তখন সাইফুল আলম বলেন, দুজন মন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেট আছে, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন? বাণিজ্যমন্ত্রীকে ধরব তো।’ তিনি বলেন, খাদ্যপণ্য নিয়ে কয়েকটা হাউস ব্যবসা করে। যখনই তারা দাম বাড়ায় আমরা আমদানি করি, বিকল্প ব্যবস্থা করি। যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই। কাজেই সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা না। কত শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি জানি না, আমি দেখব কী ব্যবস্থা করা যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা উৎপাদন করেন। বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে। নির্ভরশীলতা কমলে সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে। এক ইঞ্চি জায়গাও অনাবাদী রাখবেন না। এখন ডিম নিয়ে শুরু করেছে। ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেবেন। অনেক দিন ভালো থাকবে। অভাব যেন না থাকে, সেটাই দেখব। সিন্ডিকেটের ওপর নির্ভরশীলতা কমায় দিব, বিকল্প ব্যবস্থা করব। সিন্ডিকেট এভাবেই ভেঙে যাবে।
এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী সিন্ডিকেট আছে এ কথা বলেননি বলে সাংবাদিকদের জানান।
তবে সিন্ডিকেট নিয়ে চলতি বছরের মে মাসে হই চই ফেলে দিয়েছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীদের ভেতরও সিনিন্ডকেট আছে।’ যদিও সেই সিন্ডিকেট বলতে তিনি সরকারি প্রকল্প, নিযোগ-এসবকে বুঝিয়েছিলেন। তিনি পণ্যমূল্য সামাল দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন। তার নিজেরই তো ব্যবসা আছে। তারপর খাদ্যমন্ত্রীর আছে। খাদ্যমন্ত্রী নিজেই চাল মিলের মালিক। আড়তের মালিক।’
কামাল আহমেদ মজুমদার আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় মন্ত্রী পরিবর্তন করা উচিত। আর স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল করা উচিত। যাদের গোডাউনে হাজার হাজার বস্তা চাল, চিনি পাওয়া যায় তাদের ধরবে। তাদের ছাড় দেবে না। করপোরেট ছয়টা কোম্পানি এখন মুড়ি, চানাচুর পর্যন্ত বিক্রি করে।’ (সূত্র যুগান্তর)
গত বছর সেপ্টেম্বরে সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেছিলেন, দেশে চালের বাজারে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যে সিন্ডিকেট আছে, তা ভাঙা সম্ভব নয়। (সূত্র প্রথম আলো)
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যমূল্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়াকে। যদিও জ্বালানির দাম বাড়ার আগে থেকেই চালের মূল্য কোনো কারণ ছাড়াই বাড়ছিল। আবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর প্রতি কেজিতে চালের দাম বাড়তে থাকে ৫-৭ টাকা পর্যন্ত। যা অতিরিক্ত। কারণ পরিবহন ব্যয়বৃদ্ধির বিষয়টি হিসাবে নিলে চালের দাম বাড়তে পারে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেন মিলারদের দিকে। মিল পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণ অবশ্য জানা যায় না। কারণ তাদের তো পরিবহন ব্যবহার করতে হয় না। জ্বালানির ব্যবহারও নেই তেমন। এই লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধি মোকাবিলায় বিভিন্ন পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সরকার। এতে ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায় অভিয়ুক্তরা।
চলতি আগস্টে সিন্ডিকেট নিয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে চিনি, ডাল, তেলসহ সতেরটি পণ্যকে নিত্যপণ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এসব মূল পণ্যগুলো আলাদা করে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এগুলোর মার্কেট শেয়ার বড় কয়েকজন আমদানিকারকদের হাতে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে একটি চক্র জরুরি নিত্যপণ্য আমদানি করা থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে তার একটি ‘ভয়াবহ চিত্র’ পাওয়া গেছে।
বিবিসি বাংলা জানায়, কয়েকজন ব্যবসায়ী যে ধারণা দিয়েছেন তা হলো-বড় ভলিউমে পণ্য আমদানি করা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একজোট হয়েছে। এখন মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ওই বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে নিজের ইচ্ছে মতো পণ্য কিনতে পারেন না।
তারা জানায়, ‘উদাহরণ স্বরূপ – একজন উদ্যোক্তা ভাবলেন, তিনি এক শ কোটি টাকার চিনি বা লবণ কিনবেন। সেজন্য বড় ব্যবসায়ীদের কাছে গেলে তারাই ঠিক করে দেন যে কোন পণ্য কত দামে কার কাছ থেকে কিনতে হবে। এতে রাজী না হয়ে উদ্যোক্তাটি যদি মনে করেন তিনি ব্রাজিল থেকে এক শ কোটি টাকার চিনি আনবেন, সে অনুযায়ী তিনি আমদানি করলেও-বড় গোষ্ঠীরা ‘তার আমদানি মূল্যের চেয়ে কম দামে বাজারে চিনি ছেড়ে’ তাকে লোকসানের মুখে ফেলে দেবে। আবার বড় চক্রের বাইরে থেকে কেউ আমদানি করতে এলসি খুলতে চাইলেও ব্যাংক রাজী হবেনা। এমনকি বাধা আসবে কাস্টমস-ভ্যাটসহ নানা দফতর থেকে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আর ভয়ংকর ব্যাপার হলো, সিন্ডিকেটের বাইরে গিয়ে বা তাদের সিগন্যাল ছাড়া কোনো পণ্য আনলে সেগুলো বন্দরে আনার জন্য লাইটার ভেসেল পর্যন্ত পাওয়া যায় না। এমনকি শ্রমিক গোষ্ঠীও এসব পণ্য খালাসে কাজ করতে আগ্রহী হয় না। ফলে অন্যদের আমদানি করা পণ্য কতদিন সাগরে বা জাহাজে পড়ে থাকবে তার নিশ্চয়তা নেই। আবার খালাস হলেও কাস্টমস ও কর বিভাগ ছাড়পত্র দেবে কিনা-তা নিয়েও সংশয় থাকে।
বিবিসি বাংলাকে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এভাবে প্রতিটি পদে পদে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে সিন্ডিকেট। টাকা থাকলেও এদের সাথে কেউ পেরে উঠবে না। এমনকি সরকার একটু দাম নির্ধারণ করে দিলে তারা পণ্য হয়তো জাহাজেই রেখে দেবে কিছুদিন – যাতে সংকটে পড়ে সরকারই চাপ দেয় যে দাম যাই হোক, পণ্য আনুন।’

তাদের মন্তব্য, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কথিত সিন্ডিকেট বলতে যাদের বোঝানো হয় তারা একদিকে যেমন বড় আমদানিকারক, আবার নানা ভাবে ব্যাংকগুলোর মালিকানা বা ব্যবস্থাপনার কর্তৃত্বেও আছেন তারাই।
ডিমের ক্ষেত্রেও সিন্ডিকেটের উপস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। গত ২২ আগস্ট দেশ রূপান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এখন পোলট্রি খামারি আছেন ৬০ হাজার। তাদের মধ্যে ২০ হাজার খামারি ডিম উৎপাদন করেন। আর ৪০ হাজার খামারি মুরগি উৎপাদন করেন। ডিম উৎপাদনকারী বেশিরভাগ খামারিকে কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ের আওতায় নিয়ে গেছে কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তাদের আগাম টাকা দিয়ে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দেওয়া হয়। সারা বছর সেই একই দামে ডিম ও মুরগি কেনে কয়েকটি করপোরেট প্রতিষ্ঠান। তাই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো সহজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাদের আবার নিজস্ব ফার্মও আছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ রূপান্তরকে জানান, প্রতিদিন সকালে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকজন নির্দিষ্ট এজেন্টদের মাধ্যমে সকাল ১০টার মধ্যে মোবাইল ফোনে এসএমসএস, ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সারা দেশে ডিমের দাম জানিয়ে দেয়। আর সেই দামেই ডিম বিক্রি হয়। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। এর সঙ্গে উৎপাদন বা চাহিদার তেমন সম্পর্ক থাকে না।
এর বাইরে কাঁচা বাজার অর্থাৎ দেশেই উৎপাদিত সবজি ও ফলের দাম বৃদ্ধি নিয়েও কাজ করে এক ‘অদৃশ্য’ সিন্ডিকেট। ক্রেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে কথা বলে জানা যায়, ডাব কেনাবেচায় রসিদ দিতে হবে, বাংলাদেশে কেউ এটা আগে কখনো ভাবেনি। ভোক্তা অধিকার পরিষদও ভাবেনি। ডাবের দাম এক শ, দুই শ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর টনক নড়ল সবার। দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলো এক শ টাকা। যদিও গত এক বছর ধরেই এক শ বা নব্বই টাকার নিচে মাঝারি আকারের ডাব পাওয়া যাচ্ছিল না দেশে। কিন্তু ডাবের দাম এমন কেন হলো? ডাব তো বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে না। তাহলে?
অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়লে পণ্যের দাম বাড়ার কথা বলা হয়। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম হয়তো বেড়েছে। তবে এর কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। ডেঙ্গুর আগে থেকেই তাহলে কেন ডাবের দাম বেশি ছিল?
সাধারণভাবে দেখা যায়, পাইকারি পর্যায়ে ডাবের দাম যা থাকে তার সঙ্গে পরিববহন, শ্রমিক, দোকান ভাড়া এসব মিলিয়ে নিজের লাভসহ খুচরা ব্যবসায়ীরা ডাবের একটা দাম নির্ধারণ করেন। এর সঙ্গে পথে পথে চাঁদাবাজির খরচ যোগ হয় কিনা তার হিসাব পাওয়া যায় না। দেশে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, শ্রমিক খরচসহ অন্যান্য কিছুর দাম বৃদ্ধির ফলে ডাবের দামও যে বাড়বে এটা স্বাভাবিক। তবে খুচরা পর্যায়ে ডাবের দাম কত থাকবে এটা নির্ধারণের কোনো পদ্ধতি বা ব্যবস্থা দেশে দেখা যায় না। কোনো কাঁচা পণ্যের ক্ষেত্রেও সেটা দেখতে পাই না আমরা। প্যাকেটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে দাম নির্ধারণের একটা সরকারি ব্যবস্থা থাকলেও সেটা বেশিরভাগ সময় অকার্যকর হয়ে পড়ে। আর এখানেই চলে আসে সিন্ডিকেটের প্রসঙ্গ।
তবে কাঁচা পণ্য যেগুলো দেশেই উৎপাদন হয়, তাদের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট সেভাবে পরিষ্কার ‍বুঝা যায় না। তা কাঁচামরিচ থেকে ডাব যা-ই হোক না কেন। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে মধ্যসত্ত্বভোগীর ভূমিকাই প্রধান। উৎপাদক পর্যায় থেকে তারা সরাসরি পণ্য কিনে জমা করেন। সেখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি দরে পণ্য কিনে নিজেদের লাভসহ বিক্রি করেন। মোটামুটি এক বাজারে একটি পণ্যের একটাই দাম থাকে। সব খুচরা বিক্রেতা সে দামেই পণ্য বিক্রি করতে থাকেন। কখনো হয়তো পণ্যের দাম বেড়ে যায়। বন্যা, বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক কর্মসূচি, অফ সিজন-এসব সাধারণত কাঁচা পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ। আর এ সুযোগটাকেই কাজে লাগায় মধ্যসত্ত্বভোগীরা। এমনকি খুচরা কৃষক পর্যায়েও এর সুযোগ নেয়া হয়। দাম বেড়েছে শুনে মুখে মুখে তারাও নিজেদের কৃষিপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। এরপর সেটা পরবর্তী সব ধাপে অনুসরণ করা হয়। ক্রেতার হাতে আসতে আসতে সেই পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যায়। এমনকি তখন চাঁদার পরিমাণও বেড়ে যায় বলে শোনা যায়। আর কোনো পণ্যই আগের দামে ফিরে আসে না। দাম বৃদ্ধির খবর নিয়ে সংবাদমাধ্যমে হই চই শুরু হলে সরকারের মন্ত্রী, ভোক্তা অধিকার সবাই খুব তৎপরতা দেখায়। কিন্তু এ নৈরাজ্য ঠেকানোর মতো জনবল, পরিকল্পনা, প্রযুক্তি কোনোটা তাদের নেই। ফলে যে কি সেই অবস্থা।
ডাবের ক্ষেত্রে তাই বলতে হয় একটা ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’ কাজ করে।
একই ধরনের অদৃশ্য সিন্ডিকেট দেখা যায় সিগারেটের ক্ষেত্রেও। বিশেষ করে বাজেট ঘোষণার আগে থেকে প্রতি বছর সিগারেটের দাম খুচরা পর্যায়ে বেড়ে যায়। এর কারণ সরবরাহ কমে যায়। সরবরাহ কমার কারণ বাজেটে দাম বাড়বে সিগারেটের। তখন নতুন দামে সেসব পুরোনো সিগারেট বিক্রি করা হবে। প্যাকেটের গায়েও লেখা থাকে পুরোনো দাম। কিন্তু খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন বাড়তি নতুন দামে। যা নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলে কোনো লাভ হয় না। ‘ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’ বিধায় এ নিয়ে কিছু বলাও যায় না। পত্রপত্রিকায় সংবাদও প্রকাশ হয় না। অনেকটা সামাজিক, রাজনৈতিক অনুকূল পরিবেশে কোটি কোটি টাকা পকেটে উঠে যায় কাদের, যাদের চেহারা কখনো প্রকাশ্য হয় না।

বিষয়: দ্রব্যমূল্যনিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যবাজার সিন্ডিকেটমূল্যস্ফীতি
ShareTweetPinSend

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কলাম

রাষ্ট্র কী চায়

৩ জুলাই ২০২৪
Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi
নির্বাচিত

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

জ্বরের নাম হীরামণ্ডি : তাওয়াইফ বনাম বেগমদের অবাক রূপকথা

৫ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে কেন?

৩০ এপ্রিল ২০২৪
নির্বাচিত

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির একটি কর্মসূচি, ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেজ
নির্বাচিত

বিএনপি কি ব্যর্থ হলো?

২২ জানুয়ারি ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় লেখা

এমেরিকা কি শেষ পর্যন্ত কিছু করবে?

১৫ জানুয়ারি ২০২৪

আর কত স্বৈরাচারের পতন আমাদের ঘটাতে হবে?

২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

সংকটে অর্থনীতি : নতুন বিনিয়োগে স্থবিরতা

২৮ অক্টোবর ২০২৩
ব্রিকস সম্মেলনে একটি রাতের খাবারের আয়োজনে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী

ব্রিকস ও বাংলাদেশ : ঘটনাপ্রবাহ

২৭ আগস্ট ২০২৩
প্রতীকী ছবি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ব্যথা ও উপশম

১০ অক্টোবর ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
google play

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist