No Result
View All Result
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
অভিমত
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ
No Result
View All Result
অভিমত
No Result
View All Result
প্রচ্ছদ নির্বাচিত

এমেরিকা কি শেষ পর্যন্ত কিছু করবে?

মাহবুব মোর্শেদ

১৫ জানুয়ারি ২০২৪

আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ার অন টেরর’ অফিশিয়ালি শেষ হয়েছে বলে আমি মনে করি না। ওয়ার অন টেরর যে শেষ হয়েছে এ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনো কিছু বলেছে বলে আমরা শুনিনি। এ সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্টের কথাও আমরা জানি না। আফগানিস্তান ও ইরাক-সিরিয়া থেকে মার্কিনিরা পিছু হটেছে, এ কথা সত্য। এ ঘটনাগুলোর পর করোনা মহামারী একটা ব্রিদিং স্পেস তৈরি করেছিল। এবং তার পরপরই য়ুক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধের পর অনেকে তত্ত্ব তৈরি করেছিলেন, এবার ইসলামের বিরুদ্ধে মার্কিনিদের যুদ্ধ শেষ। এখন ইওরোপের সঙ্গে ইওরোপের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বিশ্ব একটা নতুন মেরুকরণের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেছে। এই মেরুকরণে আমরা কোন পক্ষ নেবো সেটাই এখন বিবেচ্য বিষয়।
একথা অস্বীকার করা উপায় নেই, বিশ্ব এখন সত্যিই নতুন মেরুকরণের সামনে দাঁড়িয়ে। সিরিয়ায় রুশ-ইরান-চীন বলয়ের অবস্থান যুদ্ধের ভাগ্য নির্ধারণের পর বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধ, গণহত্যা ও বহুমুখী সংঘর্ষের ধ্বংসস্তূপ থেকে বাশার আল আসাদের উত্থান বলে দিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্ব আগের মতো নেই।
তবে আফগানিস্তানের ভাগ্য রুশ-চীন বলয় নির্ধারণ করেনি। বরং ভারতের ভূমিকা দেশটিকে এই পরিণতির দিকে নিয়ে গেছে। ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান দখলের পর দেশটির রূপান্তরের দায়িত্ব ভারতকে দিয়েছিল। কিন্তু ভারত সেখানে কোনো ইতিবাচক রূপান্তর ঘটাতে পারেনি। আফগানিস্তানে শক্তিশালী অবস্থানের সুযোগে তারা বরং পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টাই বেশি করেছে। পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোকে অস্থিতিশীল করে দেশটিকে ভাঙ্গার চেষ্টা করেছে। এ কাজ করার জন্য তারা এমনকি ইসলামপন্থী গ্রুপগুলোকেও কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু আফগানিস্তানের জন্য সবচেয়ে জরুরি ছিল- একটি স্থিতিশীল বাজার ব্যবস্থা ও শক্তিশালী মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করা। সেটি বাস্তবে ঘটেনি। সেখানে ন্যাটো ও ভারতীয় উপস্থিতির সুবিধাভোগী ছোট একটি অংশ তৈরি হয়েছিল। যাদের সংখ্যা এতই কম যে, ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে বিমানে করেই তাদের প্রায় সবাইকে স্থানান্তর করা সম্ভব। আফগানিস্তানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর সেখানে ন্যাটো বাহিনীর ব্যর্থতার মূল কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-কেন্দ্রিক দক্ষিণ এশিয়া নীতি ও দেশটিতে ভারতীয় কার্যক্রমের ব্যর্থতা।
কিন্তু এটা ভাবার কোনো প্রত্যক্ষ কারণ আমাদের হাতে নেই যে, সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে পেছনে হটেছে এবং ইরাকে চাপে পড়েছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ওয়ার অন টেরর’ নীতি পরিত্যক্ত হয়েছে। বরং বলা চলে, এই অভিজ্ঞতাগুলো থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হার্ড পাওয়ারের বদলে সফট পাওয়ার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকেছে। যার ফলে, এব্রাহামিক একর্ডের জন্ম। মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে সামরিক উপস্থিতির মাধ্যমে আপাতঅর্থে পরাজিত ও অজনপ্রিয় হওয়ার বদলে মার্কিনিরা আরব দেশগুলোতে সর্বাত্মক কূটনীতি শুরু করে। চীনের মধ্যপ্রাচ্য নীতি মোকাবেলা করতে তারা আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তি ও সহাবস্থান চুক্তির দিকে বেশি মনোযোগ দেয়। এই প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস মধ্যপ্রাচ্যের এই তথাকথিত শান্তি ও সহাবস্থান প্রক্রিয়া নস্যাৎ করতে ইসরায়েলের ওপর হামলা করে। আমরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের মধ্যদিয়ে অন্য ফর্মে ওয়ার অন টেরর ফিরে এলো। মুখে কেউ বলছে না এটা ওয়ার অন টেরর। কিন্তু বাস্তবে তা-ই ঘটছে। হামাস, হেজবুল্লাহ, হুথিদের ওপর হামলা চলছে। ইরানও পরোক্ষ হামলার বাইরে থাকতে পারছে না। প্র্যাকটিক্যালি আমরা দেখতে পাচ্ছি, মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ফিরে এসেছে।
সত্যি কথা হলো, এমেরিকা সামরিক উপায় পাশে রেখে ডিপ্লোম্যাটিক উপায়ে আগাতে থাকলেও দেশটির ন্যাটোভুক্ত শরিকরা কখনোই মন থেকে ওয়ার অন টেররের হ্যাংওভার থেকে মুক্ত হয়নি। আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতির কেন্দ্র ইসরায়েল কখনোই ওয়ার অন টেরর নীতি পরিত্যাগ করেনি। দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন নীতির কেন্দ্র ভারতও ওয়ার অন টেরর নীতি থেকে সরে আসেনি। হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের মাধ্যমে খানিক বিরতি দিয়ে যুদ্ধটা পুনর্জন্ম লাভ করেছে।
দ্বিতীয় যে বিষয়টি নিয়ে আমি বিশ্লেষকদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করি, তা হলো, দক্ষিণ এশিয়ায় এমেরিকানদের ভারত কেন্দ্রিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এটা ঠিক যে, মার্কিন কর্মকর্তাদের মুখেই আমরা শুনেছি, তারা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে আর ভারতের চোখে দেখছেন না। বাংলাদেশের বেলায় আমরা বহুবার শুনেছি, এমেরিকানরা বাংলাদেশকে নিজেদের চোখে দেখবে, ভারতের চোখে নয়।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটাই ঘটা উচিত। কেননা, দক্ষিণ এশিয়ার ভারতীয় কূটনীতি শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিনিরা ভারতকে দিয়ে চীন মোকাবেলার নীতি থেকে ভারতের ওপর নির্ভর করে দক্ষিণ এশিয়া সাজানোর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই ভারত চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকবেলা করতে পারছে না, মার্কিন স্বার্থরক্ষা তো দূরের কথা। আফগানিস্তান তালেবানদের হাতে, চীনের প্রভাব বাড়ছে সেখানে। ইমরান খানের অপসারণের পর পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থেকে গেছে কোনো রকমে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কায় চীনের প্রভাব মোকাবেলায় ভারত তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি। সবশেষ মালদ্বীপে যা হচ্ছে, তা বলে দিচ্ছে, পরিস্থিতি ভারতের আওতার বাইরে। কিন্তু এত কিছুর পরও মাকির্নিরা ভারতের বাইরে যেতে পারছে না।
বলা হয়, এ অঞ্চলে ভারত-কেন্দ্রিক নীতির কারণে মার্কিন রিসোর্স ও সফট পাওয়ার এলিমেন্টগুলোর ওপর ভারতের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে ভারত দীর্ঘদিন ধরে এগুলো ব্যবহার করে নিজেদের করে নিয়েছে। উদারহরণ হিসেবে বাংলাদেশের কথা বলা যায়। এদেশে যে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কিনপন্থী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বিবেচিত হতো, গত ১৫-১৭ বছরে তাদের অনেকে ভারতপন্থী-মার্কিনপন্থী বা স্রেফ ভারতপন্থী হিসেবে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশেই এমনটি ঘটেছে। এই অংশগুলোকে নিজেদের পক্ষে পুরোপুরি সক্রিয় করে তোলা মার্কিনিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
উপরন্তু, ভারত নিজেকে পরাশক্তি হিসেবে দেখে এবং সে অনুসারে সক্রিয় থাকতে পছন্দ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটিকে যে সুযোগ দিয়েছে তা ব্যবহার করে তারা শক্তিশালী হয়েছে। নিজেদের একটা স্বাধীন পরাশক্তি সত্তাও তারা তৈরি করতে সচেষ্ট। নানা বৈশ্বিক ফোরামে তারা আলাদা করে উপস্থিত থাকতে চায়। কোয়াডের সদস্য হয়েও য়ুক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সময় তারা রাশিয়ার সঙ্গে ভারসাম্যমূলক নীতি নিয়েছে। এমনকি চীনের সঙ্গে অসম্ভব হলেও এক ধরনের বন্ধুত্বে হাত বাড়িয়ে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বার্মানীতির সঙ্গে তারা পুরোপুরি একমত হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসেফিক স্ট্রাটেজির সঙ্গে তারা যায়নি। এবং পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বাড়ানোর বদলে কমানোর ব্যাপারেই তারা আগ্রহী। এ বিষয়ে চীনের সঙ্গে কৌশলগত মৈত্রী করতেও তাদের অনীহা নেই। পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে ইচ্ছা থাকলেও ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু করতে পারবে, এমন বাস্তবতা নেই। ভারত কিছু করতে পারুক না পারুক, নিজের মতো করে চলবে বলে ঠিক করেছে। একদিকে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও অন্যদিকে ভারতের নিজস্ব হিসাব-নিকাশ এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল করে দিয়েছে। চীনের ফ্রন্ট ইয়ার্ড দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুপার পাওয়ারের মর্যাদা ধরে রাখতে পারবে কি না সে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
ফলে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের চোখে বাংলাদেশকে দেখার কথা বললেও কার্যক্ষেত্রে তা করতে পারেনি।
এমেরিকানরাও হয়তো এই মূল্যায়ন করেছে। তারা বুঝতে পেরেছে, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ভিসা নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা, টার্গেটেড স্যাংশনের মতো সফট ওয়েপন ব্যবহার করলেও ভারত-চীন-রাশিয়ার কারণে সেগুলো থেকে ফল নাও আসতে পারে। বিরোধীদের আন্দোলনের সক্ষমতাকেও তারা হয়তো আস্থায় নিতে পারেনি। এমনকি তারা এও ভাবতে পারে, নির্বাচনের পরও এগুলো থেকে ফল নাও আসতে পারে। এ কারণেই হয়তো তারা নির্বাচনের আগে শক্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নির্বাচনের পরেও এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেরি করছে।
কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়া গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ভারত এখানে চীন মোকাবেলা করতে পারবে না, এটা প্রমাণিত হয়ে গেছে। এখানে সফল হতে না পারলে এ অঞ্চলটি পাকাপাকিভাবে চীন বলয়েই ঢুকে যাবে। আপাতত, ভারত হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে এই বলে প্রবোধ দিচ্ছে যে, দক্ষিণ এশিয়ায় তারা চীন মোকাবেলা করতে না পারলেও এ অঞ্চলের পটেনশিয়াল হুমকি ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের মোকাবেলা করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানে কোল্ড ফর্মে ওয়ার অন টেরর চলছে সে কথা অস্বীকার করা যাবে না। পাকিস্তানকে পক্ষে রাখতে গিয়ে মার্কিনিরা দেশটিতে অজনপ্রিয় হয়েছে। বাংলাদেশের জনমত তাদের পক্ষে হলেও তারা এখানে গণতন্ত্র আনতে এখনও সফল হতে পারেনি।
আগের একটি লেখায় আমি বলেছিলাম, দক্ষিণ এশিয়ার মার্কিন নীতির টার্নিং পয়েন্ট বাংলাদেশ বা ভারত নয়, বার্মা। বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন নীতি কী? নির্বাচন নিয়ে তারা কী ভাবে? কাদের ক্ষমতায় আনতে চায় বা চায় না? এ প্রশ্নগুলোর সদুত্তর কিছু জানা যায় না। এসব ব্যাপারে তাদের কথাবার্তা একাডেমিক। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা শব্দগুলো দিয়ে প্র্যাকটিক্যালি কিছু বোঝা যায় না।
কিন্তু বার্মার ব্যাপারে এমেরিকানরা বেশ প্র্যাকটিক্যাল। সেখানে গণতন্ত্র ফেরাতে বার্মা অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। এটা কোনো স্পেকুলেশন নয়। বার্মার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে জান্তা সরকারের বিরেুদ্ধে যুদ্ধে নামিয়ে তারা থামেনি, তাদের নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্রোহীরা সেখানে যথেষ্ট সাফল্যও পেয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগত চয়েস হিসেবে বার্মা খুবই ভাল। চীন সীমান্তের দেশটিকে ভেঙে দিতে পারলে এবং সেখানে গণতান্ত্রিক সরকার কায়েম করতে পারলে চীন কাবু হয়ে যাবে। চীনও বিষয়টাকে সিরিয়াসলি নিয়েছে। তারা জান্তা সরকারের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েছে। সর্বশেষ খবরে জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশর নির্বাচনের কয়েকদিনের মাথায় চীনের মধ্যস্থতায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তার যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারকে চীন সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছে এদেশে তার বিনিয়োগ ও ব্যবসার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, এ ধারণা ভুল। বাংলাদেশে যাতে এমন কোনো সরকার ক্ষমতায় না আসে যারা বার্মায় মার্কিন নীতি সমর্থন করবে, এটাই বরং চীনের মূল চাওয়া। এ বিষয়ে ভারতও চীনের সঙ্গে একমত। ভারতও চায় না বার্মা খণ্ডিত হয়ে কয়েকটি দেশ গড়ে উঠুক, যে দেশগুলোর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট একটি অঞ্চল থাকার সমূহ সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আওয়ামী লীগের পক্ষে নয়, বার্মা অ্যাক্টের বিরুদ্ধেই ভারত-চীন-রাশিয়া একাট্টা হয়েছে বলে ধারণা করা যায়। আর এটিই বাংলাদেশের নির্বাচনের ভাগ্য ঠিক করে দিয়েছে।
নির্বাচনের আগে পরে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের মুখে মার্কিন-বিরোধী নানা কথা আমরা শুনতে পেয়েছি। অনেকেই মনে করেন, এ কথাগুলো বিরোধীদের প্রথমে মিথ্যা আশা দিতে এবং পরে আশাহত করে দেওয়ার জন্য বলা হয়। এমনকি সরকারের লোকেরা কৌশলে বিরোধী বিশ্লেষকদের দিয়েও এসব বলিয়ে বিরোধীদের বিভ্রান্ত করেন।
আবার কেউ মনে করেন, এগুলোর মধ্যে সত্যতা আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু একটা করবে। ক্ষমতাসীনরা সে কথা জানেন। আর জানেন বলেই জনগণকে প্রস্তুত করার জন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে কথাগুলো বলছেন।
ওপরের দুটো পয়েন্টই ঠিক। কিন্তু আরো বড় কারণে এর পেছনে থাকতে পারে। সেটি হলো, নতুন ধরনের জাতীয়বাদী বয়ান তৈরি করা। মার্কিন বলয় থেকে চীন-রাশিয়া বলয়ে ঢোকার রাজনৈতিক ভাষ্য তৈরি করা। আমরা স্বীকার করি বা না করি, এদেশে মার্কিন বিরোধী একটা মুসলিম জনমত আছে। এই জনমতকে ক্ষমতাসীনরা কৌশলে অ্যাড্রেস করতে চাইছেন। মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি তাদের সুবিধা করে দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্য বা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং বাজারে তার প্রভাব পড়ে তবে সরকার সেটাকেও ভালভাবে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা, স্যাংশন, ট্রেড স্যাংশনের মতো সফট পাওয়ার ব্যবহার করে বাংলাদেশে নিজেদের পক্ষের একটি সরকার আনা খুব কঠিন। আর এগুলো ব্যবহার করলে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জনমত সরকারের দিকে ঝুঁকে যেতে পারে। যদিও নির্বাচনের আগে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারতো। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি জনপ্রিয় সরকারের সঙ্গে খুব সহজেই তারা একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারতো। বার্মায় তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারতো। কিন্তু নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর সহজ সমাধানের অবকাশ রইলো না।
কিন্তু, একথা সত্য, বার্মায় তারা একটি যুদ্ধ শুরু করেছে। পাকিস্তানে পট পরিবর্তন করে তারা বুঝিয়েছে, তারা কতটা ডেসপারেট।
এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধিতে তারা উদ্বিগ্ন। ভারতের ভূমিকা নিয়ে তারা স্বস্তিতে নেই। বাংলাদেশে সফল হতে না পারলেও, তারা যে যথেষ্ট সিরিয়াস সেটি চোখে দেখা গেছে। বার্মায় সফল হতে হলে বাংলাদেশকে পাশে পেতে হবে তাদের।
আবার ভারত তাদের সফলভাবে বোঝাতে পেরেছে, এদেশে আওয়ামী লীগের বিকল্প গণতান্ত্রিক সরকারটি ইসলামপন্থীদের সমর্থনে ক্ষমতায় আসবে অথবা ক্ষমতায় এসে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলবে। এরা ভারতকে অস্থিতিশীল করে তুলবে, ফলে ভারতের হাতে আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। মার্কিনি, ইওরোপীয় ও ইসরায়েল লবি এই তত্ত্ব গ্রহণ করেছে বলে ধারণা করা যায়।
পাকিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সরাসরি পক্ষে রাখার চিন্তা থেকে মার্কিনিরা সরে যাবে, একথা চিন্তা করা কঠিন। বিশেষ করে, যখন বাংলাদেশের জনমত মার্কিনিরা কিছু করবে এমন অপেক্ষায় অস্থির হয়ে আছে। এমন ঘটনা ইতিহাসে কোনো দেশে মার্কিন পদক্ষেপের গ্রহণের আগে ঘটেছে বলে আমার তো মনে পড়ে না।

বিষয়: আফগানিস্তানইরানইসরোয়েলওয়ার অন টেররচীনতালেবানন্যাটোবার্মা অ্যাক্টভারতমধ্যপ্রাচ্যমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রমাহবুব মোর্শেদমিয়ানমারসফট পাওয়ারহামাসহুথিহেজবুল্লাহ
ShareTweetPinSend

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

কলাম

রাষ্ট্র কী চায়

৩ জুলাই ২০২৪
Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi
নির্বাচিত

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

জ্বরের নাম হীরামণ্ডি : তাওয়াইফ বনাম বেগমদের অবাক রূপকথা

৫ জুন ২০২৪
নির্বাচিত

লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে কেন?

৩০ এপ্রিল ২০২৪
নির্বাচিত

নাগরিক সমাজ কোথায় হারালো?

১৬ এপ্রিল ২০২৪
বিএনপির একটি কর্মসূচি, ছবি : বিএনপির ফেসবুক পেজ
নির্বাচিত

বিএনপি কি ব্যর্থ হলো?

২২ জানুয়ারি ২০২৪

Discussion about this post

জনপ্রিয় লেখা

Glimpses of the new Parliament Building, in New Delhi

যে নির্বাচনে জিতেও হার মোদীর, হেরেও জয় ‘ইন্ডিয়া’র

৮ জুন ২০২৪
ব্যালট বক্স

নতুন ভোটারদের হাতেই ভবিষ্যৎ

২৪ আগস্ট ২০২৩
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য

মির্জা ফখরুলের সমালোচনায় পিনাকী ভট্টাচার্য

২৫ আগস্ট ২০২৩
ডোনাল্ড লু

অবশেষে ডোনাল্ড লু’র চিঠি পেল আওয়ামী লীগ

১৫ নভেম্বর ২০২৩
প্রতীকী ছবি

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ব্যথা ও উপশম

১০ অক্টোবর ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
google play

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • মন্তব্য
  • বিতর্ক
  • সাক্ষাৎকার
  • বিশ্লেষণ
  • কলাম
  • পরিক্রমা
  • রিভিউ

অভিমত
ঠিকানা: ২০ বাবুপুরা (৩য় তলা), কাঁটাবন ঢাল, কাঁটাবন। ঢাকা ১২০৫। ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © ২০২৫ অভিমত

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist